ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আওয়ামী লীগ

বর্ষীয়ান রাজনীতিক টিপু সুলতানের দাফন সম্পন্ন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২০ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৭
বর্ষীয়ান রাজনীতিক টিপু সুলতানের দাফন সম্পন্ন কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে বর্ষীয়ান রাজনীতিক টিপু সুলতানের তৃতীয় জানাজা/ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

যশোর: যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি খান টিপু সুলতানের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

শেষ শ্রদ্ধা শেষে রোববার (২০ আগস্ট) রাত ১২টায় খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ধামালিয়া গ্রামে পঞ্চম ও শেষ জানাজার পর পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের পাশে তাকে দাফন সম্পন্ন হয়।

এরআগে, বর্ষীয়ান এ নেতার কফিনে শেষ শ্রদ্ধা জানান ঢাকা, যশোর ও মণিরামপুর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

রোববার রাত ৮টার পর টিপু সুলতানের নির্বাচনী এলাকা মণিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে চতুর্থ নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

বিকেলে যশোর জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন ও কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে তৃতীয় জানাজা শেষে সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটের দিকে টিপু সুলতানের কফিন মণিরামপুরে এসে পৌঁছায়। সর্বসাধারণের শেষ শ্রদ্ধা জানাতে মরদেহ তার মণিরামপুরের বাড়ির সামনে রাখা হয়। সেখানে টিপু সুলতানের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান মণিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতারা, স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা বিএনপির সভাপতি, মণিরামপুর প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, পেশাজীবী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য, সংসদ সদস্য স্বপন ভট্টাচার্য্য, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা কামরুল হাসান বারি, উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শহীদ মোহাম্মদ ইকবাল, পৌরসভার মেয়র কাজী মাহমুদুল হাসান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন লাভলু, কেশবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমির হোসেন, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মিকাইল হোসেন প্রমুখ।

প্রিয় নেতার মরদেহ শেষবারের মতো দেখতে দলমত নির্বিশেষে হাজারও মানুষ ভিড় করেন। তারা মরহুমের রুগের মাগফিরাত কামনা করেন।

এরআগে, শনিবার (১৯ আগস্ট) রাত ৯টা ৩৮ মিনিটে ঢাকা সেন্ট্রাল হসপিটালের চিকিৎসকরা লাইফ সাপোর্ট খুলে দিয়ে টিপু সুলতানকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে রোববার সকালে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজাসহ ঢাকায় তার দুই দফা নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। রোববার বিকেলে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার যোগে তার মরদেহ শহরের ঈদগাহ ময়দানে এনে তার তৃতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। পরে মরদেহ যশোরের দলীয় কার্যালয়ে নেয়া হলে সেখানে তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। তার মরদেহে দলীয় পতাকা মুড়িয়ে দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন চাকলাদার। এরপর ফুল দিয়ে তাকে শ্রদ্ধা জানান আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য পীযুষ কান্তি ভট্টাচার্য।

পরে একে একে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারসহ জেলা আওয়ামী লীগের  নেতারা শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করেন।

এসময় জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আব্দুস সাত্তার, যশোর যুবলীগ, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুব মহিলা লীগ, যশোর পৌরসভা, জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদ, জেলা কমিউনিষ্ট পাটি, মণিরামপুর কল্যাণ সমিতি, যশোর বিভাগ আন্দোলন পরিষদ, জেলা শ্রমিক লীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করেন।

ঈদগাহ ময়দানে জানাজায় উপস্থিত ছিলেন- যশোরের জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দিন, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. আনোয়ার হোসেন, সাবেক ভিসি ড. আব্দুস সাত্তার,  জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার, সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধ একেএম খয়রাত হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম আফজাল হোসেন, দফতর সম্পাদক মাহমুদ হাসান বিপু, আইন বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাদির, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান মনি, সদস্য ইমাম হাসান লাল, জেলা মুক্তিযুদ্ধা সংসদের কমান্ডার রাজেক আহমেদ, সাবেক কমান্ডার মাজাহারুল ইসলাম মন্টু, সদর উপজেলা কমান্ডার মোহাম্মদ আলী স্বপন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের কেন্দ্রীয় কার্যকরী সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা রবিউল আলম, জেলা যুবলীগের সভাপতি মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী, সহ-সভাপতি সৈয়দ মেহেদী হাসান, ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম জুয়েল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল, বর্তমান সভাপতি রওশন ইকবাল শাহী, সাধারণ সম্পাদক ছালছাবিল আহমেদ জিসান, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রবিউল ইসলাস, শহর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান রনি প্রমুখ।

বর্ণাঢ্য জীবনে খান টিপু সুলতান স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও রাজনৈতিক জীবনে ১৯৬৯ সাল থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত যশোর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৮ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। পরে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৯৫ সালে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন টিপু সুলতান।

১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে যশোর-৫ (মণিরামপুর) থেকে নির্বাচিত হন খান টিপু সুলতান। এ সময় তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালের ১২ জুন সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো তিনি যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

পরে ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নৌকা প্রতীক নিয়ে ধানের শীষের প্রার্থী মুফতি ওয়াক্কাসের কাছে হেরে যান। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টিপু সুলতান বিজয়ী হয়ে তৃতীয়বারের মতো জাতীয় সংসদ সদস্য হন। এরপর ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নিজ দলের বিদ্রোহী প্রার্থী স্বপন ভট্টাচার্য্যর কাছে পরাজিত হন।

বাংলাদেশ সময়: ০৭০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৭
ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আওয়ামী লীগ এর সর্বশেষ