ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

শামসুল আরেফীনের ‘আহমদ ছফার অন্দরমহল’

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২০
শামসুল আরেফীনের ‘আহমদ ছফার অন্দরমহল’ ‘আহমদ ছফার অন্দরমহল’ গ্রন্থের প্রচ্ছদ ও লোকগবেষক শামসুল আরেফীন।

চট্টগ্রামের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান বলাকা প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হয়েছে লোকগবেষক ও কবি শামসুল আরেফীনের ‘আহমদ ছফার অন্দরমহল’।

বাংলা সাহিত্যের অসামান্য লেখক, কথাশিল্পী ও বুদ্ধিজীবী আহমদ ছফাকে নিয়ে রচিত গ্রন্থটি এবারের (২০২০) বাংলা একাডেমি বইমেলায় ও চট্টগ্রামের বইমেলায় দ্বিতীয়বারের মতো প্রকাশিত হলো।

এই গ্রন্থটি ২০০৪ সালের একুশে বইমেলায় প্রথম প্রকাশিত হয় বলাকা প্রকাশন থেকে।

তখন গ্রন্থটি সাড়া জাগায়, বেশ প্রশংসিত হয় এবং দ্রুত ফুরিয়ে যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইমেরিটাস অধ্যাপক, জাতীয় অধ্যাপক, ভারতের পদ্মভূষণ পদকপ্রাপ্ত ড. আনিসুজ্জামান তখন এই গ্রন্থটি সম্পর্কে লিখেছিলেন: ‘আহমদ ছফার মতো প্রতিভাবান লেখকের অকাল মৃত্যুতে তার সম্পর্কে যে অনেক লেখা প্রকাশিত হবে, তা স্বাভাবিক। এসব লেখায় আবেগ আছে, স্মৃতির সঞ্চয় আছে, তার চিন্তাধারা ব্যাখ্যার চেষ্টা আছে, তার রচনার বিশ্লেষণ আছে’।

তিনি লিখেছেন, ‘আহমদ ছফার অন্দরমহল’বইয়ে শামসুল আরেফীন প্রাথমিক উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তার জীবনকাহিনী পুনঃনির্মাণ করার চেষ্টা করেছেন এবং আহমদ ছফার পত্রগুচ্ছ সংকলন করে তার মানসপ্রকৃতি উদঘাটনের প্রয়াস পেয়েছেন। এ ধরনের উদ্যোগ অল্প সময়ে সম্পূর্ণ হওয়ার নয়, তবু তার মূল্য আছে। কিছু পুনরুক্তি থাকা সত্ত্বেও রচনাটি পাঠযোগ্য। আহমদ ছফাকে যারা ভালোবাসেন, যারা বুঝতে চান, যারা বিশ্লেষণ করতে চান, এ-বই তাদের সবার কাজে আসবে। এ বইয়ের লেখক ও প্রকাশককে এই সাধু প্রয়াসের জন্য আমি ধন্যবাদ জানাই।

এরপর পাঠকের কাছ থেকে গ্রন্থটি পুনরায় প্রকাশের তাগাদা থাকলেও নানা কারণে প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। গ্রন্থটি প্রথম প্রকাশিত হওয়ার পর প্রায় ১৬ বছর গত হলেও এখনও পাঠকের কাছে তার ব্যাপক চাহিদা বিদ্যমান থাকায় গ্রন্থটি আবারও প্রকাশিত হলো।

এই দ্বিতীয় সংস্করণে গ্রন্থটিকে আগাগোড়া নতুন করে সাজানো হয়েছে। এতে ৬ পর্বের আলোচনা রয়েছে। ‘আহমদ ছফার অপ্রকাশিত পত্রগুচ্ছ’ পর্বে আহমদ ছফার আরও ১০টি চিঠি যুক্ত করে সর্বমোট ৬২টি চিঠি উপস্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও আহমদ ছফাকে লেখা পত্র, আহমদ ছফা সংক্রান্ত পত্র, জীবনপঞ্জি, গ্রন্থপঞ্জি ও বংশলতিকা উপস্থাপন করা হয়েছে। ফলে বলা যায়, এই দ্বিতীয় সংস্করণ মূলত পরিবর্ধিত, পরিমার্জিত ও সংশোধিত সংস্করণ।

উল্লেখ্য, শামসুল আরেফীন দীর্ঘকাল ধরে লোকগবেষক হিসেবে এপার-ওপার বাংলার সাহিত্যাঙ্গনে পরিচিত। তিনি লোক ও অন্যান্য বিষয়ে বলাকা প্রকাশন থেকে অনেকগুলো গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন। ‘আহমদ ছফার অন্দরমহল’ ছাড়া তার অন্য গ্রন্থগুলোর নাম: আস্কর আলী পণ্ডিত: একটি বিলুপ্ত অধ্যায় (ফেব্রুয়ারি ২০০৬, পৃষ্ঠাসংখ্যা ১১২), বাঙলাদেশের লোককবি ও লোকসাহিত্য ১ম খণ্ড (ফেব্রুয়ারি ২০০৭, পৃষ্ঠাসংখ্যা ১২৮),  বাঙলাদেশের লোককবি ও লোকসাহিত্য ২য়-৪র্থ খণ্ড (জানুয়ারি ২০০৮, পৃষ্ঠাসংখ্যা ২৪০), আস্কর আলী পণ্ডিতের দুর্লভ পুথি জ্ঞানচৌতিসা ও পঞ্চসতী প্যারজান (সংগ্রহ ও সম্পাদনা; ফেব্রুয়ারি ২০১০, পৃষ্ঠাসংখ্যা ২৮০),  বাংলাদেশের বিস্মৃতপ্রায় লোকসঙ্গীত ১ম খণ্ড (সংগ্রহ ও সম্পাদনা; ফেব্রুয়ারি ২০১২, পৃষ্ঠাসংখ্যা ৪৩২), বাঁশরিয়া বাজাও বাঁশি (পল্লীগানের গ্রন্থ; ২০১২ সালে ‘বাংলাদেশের বিস্মৃতপ্রায় লোকসঙ্গীত ১ম খণ্ড’ গ্রন্থভুক্তির মাধ্যমে প্রকাশিত), আস্কর আলী পণ্ডিত: ৮৬বছর পর (সংগ্রহ ও সম্পাদনা; ফেব্রুয়ারি ২০১৩, পৃষ্ঠাসংখ্যা ১৬০), গাঙ্গেয় বদ্বীপের অনন্য সঙ্গীতজ্ঞ: স্বপন কুমার দাশ (সম্পাদনা; সরগম একাডেমি, আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠাসংখ্যা ৩২), আঠারো শতকের কবি আলী রজা ওরফে কানুফকির (ফেব্রুয়ারি ২০১৭, পৃষ্ঠাসংখ্যা ১২০), রুবাইয়াত-ই-আরেফীন (কাব্য, ফেব্রুয়ারি ২০১৪, পৃষ্ঠাসংখ্যা ৬৪), বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার দুর্লভ দলিল (ফেব্রুয়ারি ২০১৬, পৃষ্ঠাসংখ্যা ১২০), সূর্য-পুত্র (কাব্য, ফেব্রুয়ারি ২০১৮, পৃষ্ঠাসংখ্যা ৬৪), কবিয়াল মনিন্দ্র দাস ও তাঁর দুষ্প্রাপ্য রচনা (ফেব্রুয়ারি ২০১৮), কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র ও স্বাধীনতা ঘোষণা (ফেব্রুয়ারি ২০১৯), কালুরঘাট প্রতিরোধ যুদ্ধ ও অন্যান্য (ফেব্রুয়ারি ২০১৯) এবং চট্টগ্রামের লোকগান: বিবিধ প্রবন্ধ (ফেব্রুয়ারি ২০২০) প্রভৃতি।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২০
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।