ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

শুভ জন্মদিন হুমায়ূন আহমেদ!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৯
শুভ জন্মদিন হুমায়ূন আহমেদ!

ঢাকা: গেলো কয়েকদিন আগেও আকাশে ছিল কার্তিকের হিম চাঁদ। এ চাঁদ বড্ড প্রিয় ছিল হুমায়ূন আহমেদের। তখনকার চাঁদ দেখতে ইট-পাথরের ঢাকা ছেড়ে চলে যেতেন নুহাশপল্লীর লিচুতলায়। সেখানেই এখন তিনি চিরশায়িত আছেন। আর সেখানকার শুধু লিচুতলা নয়, গাছপালা-লতাপাতা, মাটির গন্ধও তাকে জানায় প্রথম শুভেচ্ছা। এবারও জানাবে। বলবে- শুভ জন্মদিন!

বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ৭১তম জন্মদিন বুধবার (১৩ নভেম্বর)। ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর জন্ম নেন তিনি।

বেঁচে থাকতে জন্মদিনটি ঘিরে পুরো দেশে হুমায়ূনভক্তদের মধ্যে সৃষ্টি হতো বিপুল উন্মাদনা। নানা আয়োজনে দিনভর মুখরিত থাকতো দখিন হাওয়া, নুহাশপল্লীতে। এখন তিনি নেই, ২০১২ সালের ১৯ জুলাই চলে যান অদেখা ভুবনে।

মৃত মানুষের জন্মদিন উদযাপন করা আর না করা একই কথা। কারণ জন্মদিন উদযাপন হয় দীর্ঘায়ু কামনা করে। তবু হুমায়ূনভক্তদের মন মানে না। দৃষ্টি সীমানার ওপারে যেন প্রিয় লেখক ভালো থাকেন- এই প্রণতিই জানাবেন তারা।

উপন্যাসে আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা পেলেও, তার শুরুটা ছিল কবিতায়। এরপর নাটক, শিশুসাহিত্য, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী, চলচ্চিত্র পরিচালনা থেকে শিল্প-সাহিত্যের প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি রেখেছেন আপন পদচিহ্ন। যার প্রতিটিতেই পেয়েছেন সাফল্যও।

১৯৭২ সালে প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ প্রকাশের পরপরই তার খ্যাতি ছড়িয়ে যায় চারদিকে। তার সৃষ্ট ‘হিমু’, ‘মিসির আলী’, ‘শুভ্র’ চরিত্র তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে সববয়সী পাঠকের কাছে হয়ে উঠে অনুকরণীয়। এছাড়া দেশে এমন মানুষের সংখ্যা হাতেগোনা, যারা তার নাটক দেখেননি।

হুমায়ূন আহমেদের লেখা উপন্যাসের সংখ্যা দুই শতাধিক। উল্লেখযোগ্য উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে- নন্দিত নরকে, শঙ্খনীল কারাগার, লীলাবতী, কবি, সৌরভ, নী, ফেরা, কৃষ্ণপক্ষ, গৌরিপুর জংশন, নৃপতি, অমানুষ, সাজঘর, বাসর, বহুব্রীহি, এইসব দিনরাত্রি, কোথাও কেউ নেই, আগুনের পরশমনি, দারুচীনি দ্বীপ, শুভ্র, নক্ষত্রের রাত, শ্রাবণ মেঘের দিন, জোছনা ও জননীর গল্প, মধ্যাহ্ন প্রভৃতি।  

তার সর্বশেষ উপন্যাস ‘দেয়াল’ও পায় আকাশচুম্বী পাঠকপ্রিয়তা। একইসঙ্গে রচনা ও পরিচালনা করেছেন বহু একক ও ধারাবাহিক নাটক। পরিচালনা করেছেন চলচ্চিত্রও। তার সর্বশেষ চলচ্চিত্র ‘ঘেটুপুত্র কমলা’র জন্য তিনি লাভ করেন মরণোত্তর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

হুমায়ূন আহমেদ তার দীর্ঘ চার দশকের সাহিত্যজীবনে বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। এর মধ্যে একুশে পদক, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার, লেখকশিবির পুরস্কার, মাইকেল মধুসূদন দত্ত পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও বাচসাস পুরস্কার অন্যতম।

দেশের বাইরেও সম্মানিত হয়েছেন হুমায়ূন আহমেদ। জাপানের এনএইচকে টেলিভিশন তাকে নিয়ে ‘হু ইজ হু ইন এশিয়া’ শিরোনামে ১৫ মিনিটের একটি তথ্যচিত্র প্রচার করে।

জন্মদিনের আয়োজন:
বিভিন্ন সাংস্কৃতিক-সামাজিক সংগঠন হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উদযাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বরাবরের মতো এবারও হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন ঘিরে চ্যানেল আই দিনব্যাপী ‘হুমায়ূন মেলা’র আয়োজন করেছে। এছাড়া হুমায়ূন আহমেদের প্রকাশকদের আয়োজনে পাবলিক লাইব্রেরি চত্বরে আয়োজন করা হবে সপ্তাহব্যাপী হুমায়ূন আহমেদ বইমেলার।

বাংলাদেশ সময়: ০০১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৯
ডিএন/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।