ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

ভাবনার দুয়ার খুলে দেয় মঞ্চনাটক

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০১৮
ভাবনার দুয়ার খুলে দেয় মঞ্চনাটক মঞ্চনাটক, টিভি ও চিত্রনাট্য নিয়ে কথা বলছেন কবি মাহবুব আজিজ। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: একটা শিল্প দেখবার বা শুনবার আগে আমরা যেখানে দাঁড়িয়ে থাকি, সেটা যখন দেখলাম বা শুনলাম, তখন কিন্তু আমরা সেই আগের জায়গাটাই থাকবো না। আমাদের সরিয়ে নেবে। শিল্পের কাজটা ঠিক তাই। এখানে যিনি বা যে আমাকে সরিয়ে নেওয়ার কাজটা করছেন, তাকে আমি আমার দায়িত্বেই চিনে নেবো।

মঞ্চনাটক, টিভি ও চিত্রনাট্য নিয়ে কথা বলার সময় এমনটাই বলছিলেন কবি মাহবুব আজিজ। শুক্রবার (৯ নভেম্বর) ঢাকা আন্তর্জাতিক সাহিত্য উৎসবে (ঢাকা লিট ফেস্ট) এ সময় তিনি প্রতিটি কাজকে শক্তিশালী করে তৈরি করার জন্যও আহ্বান জানান।

সেশনে কথা বলেন কথা বিশিষ্ট লোক গবেষক সাইমন জাকারিয়া, চিত্রপরিচালক অমিতাভ রেজা চৌধুরী এবং আলতাফ শাহনেওয়াজ। সেশন মডারেটর করেন অভিনেত্রী বন্যা মীর্জা।

সাইমন জাকারিয়া রবীন্দ্রনাথকে উদ্ধুত করে বলেন, ভাবুকের চিত্তের ভেতরেই রঙ্গমঞ্চ। তিনি যা বলেন, তাই করতে পারেন। আর থিয়েটারে মূলত সেটাই শক্তি যে, এ মুহূর্তে এই জায়গাটিকে বদলে ফেলা যায়। তাকে আরেকটি জায়গায়তে রূপান্তরিত করা যায়। যা অন্য ক্ষেত্রে বিরল।

শিল্পীদের কাজের জন্য গল্প ও চিত্রনাট্যের মূল্যায়নের প্রসঙ্গে কথা বলেন চিত্রপরিচালক অমিতাভ রেজা। ক্রেডিট তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার পরিচালনায় যদি আমার নাম না যায়, তবে আমি সব থেকে হ্যাপি থাকবো। এটা আমার কাছে একদমই গুরুত্বপূর্ণ না। আমাদের উচিত নামের পেছনে না গিয়ে গল্পটা ভালো করা। যদি আমার ভালো লাগে, তবে আমি খুঁজে বের করে নেবো যে এটা কে করেছে। মূল ব্যাপার দর্শক এটাকে কিভাবে নিচ্ছে।

বর্তমানে প্রতিটি সেক্টরের জন্য নির্দিষ্ট মানের মানুষ তৈরি হচ্ছে না। এর ফলে যেটা হচ্ছে, একজন লোক নিজেই গল্প লিখছেন, চিত্রনাট্য করছেন, তিনিই সিনেমাটোগ্রাফি দেখছেন।  

এ প্রসঙ্গে বক্তারা বলেন, এতে করে যেটা হচ্ছে, তার জীবনে দু’টো তিনটে সিনেমা হচ্ছে, তারপর কিন্তু তার আর কোনো কাজ হচ্ছে না। স্পেলাইজেশনের ঘাটতির কারণে যারা সবগুলো জিনিস একসঙ্গে করতে যাচ্ছেন, তারা কিন্তু খুব দ্রুত তাদের সৃজনশীল জায়গা থেকে সরে আসছেন।

মঞ্চনাটকের উপর আলোকপাত করে আলোচকরা বলেন, বর্তমানে আমরা মঞ্চ নাটকের জায়গা থেকে সরে গিয়ে ডিজাইন নির্ভর বা টিভি নাটক বেশি করছি। এতে আমরা আমাদের থিয়েটারের বিষয়গুলো যেমন- গল্প, কাঠামোসহ অনান্য জিনিসগুলো থেকে সরে যাচ্ছি। এতে করে যখন নাটক শেষ হয়ে যাচ্ছে, দর্শক শুধু ইমেজগুলো নিয়ে চলে যাচ্ছে। কিন্তু নাটকের কোনো তথ্য বা অন্য কোনো মাধুরতা তার কাছে থাকছে না। অন্যদিকে মঞ্চনাটক বা থিয়েটার আমাদের ভাবনার জায়গাগুলো খুলে দিচ্ছে।

গল্প এবং চিত্রনাট্য দু’টি আলাদা বিষয়ের উপর তারা বলেন, একটা সিনেমা বা নাটকে গল্পই যদি না থাকে আমি দেখতে যাবো কেন? আমি নাটক দেখবো না, সিনেমা দেখবো না, আমি উপন্যাস পড়বো না, গল্প পড়বো না, আমি কিছুই করবো না যদি ওটার ভেতর কোনো আখ্যান না থাকে। গল্পে আমাকে টেনশনে রাখতে হবে, আমাকে উত্তেজিত করতে হবে। আবার একই গল্পের নানা রকম ট্রিটমেন্ট হয়ে উঠতে পারে চিত্রনাট্যে।  

বক্তারা যোগ করেন, পরিবেশনাটা কেমন হচ্ছে এবং পরিবেশনার রীতির উপর নির্ভর করবে সিনেমাটোগ্রাফির অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো। প্রত্যেকে তার নিজের ভঙ্গিতেই নির্মাণ করবে এবং সেটি তার চিন্তার জায়গা থেকেই করবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৮
এইচএমএস/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।