ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

প্রেম পূর্ণতার অনুপম যুগলবন্দি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত আসরে

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৭
প্রেম পূর্ণতার অনুপম যুগলবন্দি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত আসরে ছবি-বাংলানিউজটোয়েটিফোর.কম

ঢাকা: রঙিন আলোর পরিবেশ পেরিয়ে ভেতরে ঢুকতেই সাজ-সজ্জার আরেক অনুপম দৃশ্য। বিশাল মাঠের এক পাশে আলোহীন সুসজ্জিত মঞ্চে হঠাৎ আলো জ্বলে উঠতেই তবলার বোলের সঙ্গে শুরু হলো ভারতীয় একঝাঁক শিল্পীর ‘কত্থক নৃত্য’ পরিবেশন।

পাঁচ দিনব্যাপী বেঙ্গল উচ্চাঙ্গ সংগীত উৎসবের দ্বিতীয় দিনের আয়োজন। এতে প্রখ্যাত অদিতি মঙ্গলদাস ড্যান্স কোম্পানি-দৃষ্টিকোন ড্যান্স ফাউন্ডেশনের নৃত্য শিল্পীদের মনোহরণকরা কত্থক নৃত্য।

ভারতের এ নৃত্য দল দু’টির পুরো পরিবেশনাতে ছিলো তিনটি পর্ব। এগুলো হলো-উৎসব, প্রিয়তমের খোঁজ এবং তারানা। নৃত্যাংশে ছিলেন অদিতি মঙ্গলদাস, গৌরী দিবাকর, মিনহাজ, আম্রপলি ভান্ডারী, অঞ্জনা কুমারী, মনোজ কুমার, সানি শিশোদিয়া।

এছাড়া, কণ্ঠ ও হারমোনিয়াম পরিবেশনে ছিলেন ফারাজ খান, তবলা ও পাঢ়ান্তে মোহিত গাঙ্গানি, পাখোয়াজ ও পাঢ়ান্তে আশীস গাঙ্গানি, বাঁশিতে রোহিত প্রসন্ন।

ছবি-বাংলানিউজটোয়েটিফোর.কমপুরো পরিবেশনাটির মূলধারণা, কোরিওগ্রাফি ও পোশাক পরিকল্পনায় ছিলেন অদিতি মঙ্গলদাস।

উৎসব পর্বের মূল পারকাশন রচনা করেছেন গোবিন্দ চক্রবর্তী এবং শ্লোক লিখেছেন সামিউল্লাহ খান। প্রিয়তমের খোঁজে পর্বে ওস্তাদ আমির খসরুর সংগীত ভাষ্যে সংগীত রচনা করেছেন সামিউল্লাহ খান। তারানা পর্বের সংগীত রচনা করেছেন শুভা মুদগাল ও আনীশ প্রধান।

নৃত্যের ছন্দ-ঝঙ্কার শেষ হতেই মঞ্চে আসে বাংলাদেশের বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের শিক্ষার্থীদের তবলা বাদন। এরপর সন্তর বাজিয়ে শোনান পন্ডিত শিবকুমার শর্মা। খেয়াল পরিবেশন করেন-পণ্ডিত উলহাস কশলকার, সেতারে সুর-ঝঙ্কারের মাতিয়ে তোলেন ওস্তাদ শাহিদ পারভেজ খান, ধ্রুপদ সংগীত পরিবেশন করেন-অভিজিৎ কুণ্ড ও বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের শিক্ষার্থীরা।

ছবি-বাংলানিউজটোয়েটিফোর.কমরাতভর এসব উচ্চাঙ্গ সংগীত ধারার সুরের ঝর্ণাধারায় হাজার হাজার সংগীত প্রিয় উপস্থিতি হারিয়ে যায় অন্যরকম এক অনন্তলোকের সন্ধানে। যেখানে প্রেম আর পূর্ণতা অনুপম দ্যোতনা হয়ে এক সঙ্গে ধরা দেয়। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের এমন অমিয় হিরন্ময় সুরধারা উপমহাদেশ ছাড়িয়ে বিশ্ব চরাচরেও তুমুল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আর এই পাললিক জনপদ ধ্রুপদ সুরের প্রধানতম উর্বর ভূমি। এই মাটিতে বেড়ে উঠা সুর সাধকরা তাদের নৃত্য আর গায়কীর অনন্যতায় রাগ-রাগিনীতে সে সুধাই বিলিয়ে দিয়েছেন।

কখনও কণ্ঠে আবার কখনও যন্ত্রে। সুর-লহরা সৃষ্টি করে। বেঙ্গল উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত উৎসবের এ দ্বিতীয় দিন মাতে উপমহাদেশের শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্যের দিকপাল শিল্পীদের সঙ্গে বাংলাদেশি শিল্পীদের কণ্ঠে সুর-লহরী আর হৃদয়ে স্নিগ্ধতা ছড়ানো সরোদ-বেহালা-বাঁশি-সন্তরের মধুময় সুর-ধ্বনি। শাস্ত্রীয় সংগীতের বিভিন্ন ধারায় পরিবেশিত এসব সুর-তাল আর লয়ের মাধুরিতে হাজার হাজার শ্রোতা-দর্শক মোহাবিষ্ট হয়ে ওঠেন।

দেশে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের চর্চা এবং প্রচার ও প্রসারের উদ্দেশ্য স্কয়ার নিবেদিত এবারের আসরে অংশ নিচ্ছেন বাংলাদেশ ও ভারত ও পশ্চিমাদেশ কাজাখস্থানের ২ শতাধিক শিল্পী। শিল্পী ও দর্শকের অংশগ্রহণ এবং ব্যাপ্তির বিচারে বিশ্বের সবচেয়ে বড় উচাঙ্গ সঙ্গীতাসরে পরিণত হওয়া বৃহৎ এ আয়োজনটি সাজানো হয়েছে দেশের নবীন শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পীদের সঙ্গে শ্রোতার মন উচাটন করা উপমহাদেশের ওস্তাদ, পন্ডিত, গুরু ও বিদুষীদের অনবদ্য পরিবেশনা দিয়ে।

বাংলাদেশ সময়: ২৩২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৭
এইচএমএস/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।