ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

গাজী আজিজুরের ‘দুরন্ত সত্তরে’ আনন্দঘন আয়োজন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৭
গাজী আজিজুরের ‘দুরন্ত সত্তরে’ আনন্দঘন আয়োজন বক্তব্য রাখছেন ছড়াকার আলম তালুকদার, মঞ্চে গাজী আজিজুর রহমানসহ অন্য অতিথিরা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: উচ্ছল ও আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপিত হলো বহুমাত্রিক লেখক, কবি, প্রাবন্ধিক ও ছড়াকার গাজী আজিজুর রহমানের ৭০তম জন্মজয়ন্তী।

এ উপলক্ষে শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত অনুষ্ঠান পরিণত হয় কবি-সাহিত্যিক ও তার গুণগ্রাহীদের মিলনমেলায়।

‘গাজী পরিবার’ আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে লেখকের জীবন-কর্ম নিয়ে আলোচনা করেন সুধীজনরা।

আলোচনায় অংশ নেন লেখকের সহধর্মিনী ও পুত্ররা। তার লেখা থেকে পাঠ ও আবৃত্তি করেন পুত্রবধূরা।

আবৃত্তিকার মোস্তফা নুরুজ্জামানের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন গাজী আজিজুর রহমানের বন্ধু ছড়াকার আলম তালুকদার, কবি মাকিদ হায়দার, কবি জাহাঙ্গীর হাবীবউল্লাহ, সাংবাদিক আরেফিন বাদল প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, আমরা ইর্ষান্বিত তার আন্তরিকতার প্রতি। তিনি কেবল শিক্ষকই নয়, দীক্ষকও। তাঁর লেখায় যে দীক্ষা তিনি দিচ্ছেন তা অনন্য।

কাসেম আলী গাজী এবং করিমন্নেসার ঘরে ১৯৪৭ সনের ২৯ সেপ্টেম্বর ভারতের দার্জিলিংয়ে জন্মগ্রহণ করেন গাজী আজিজুর রহমান। ১৯৬৪ সালে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জের নলতা হাইস্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন, ’৬৬ সালে সাতক্ষীরা কলেজ থেকে আইএ (উচ্চমাধ্যমিক) এবং ’৬৯ সালে জগন্নাথ কলেজ থেকে বিএ (স্নাতক) পাশ করেন। এরপর ’৭২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ (স্নাতকোত্তর) ডিগ্রি লাভ করেন। ‘গাজী আজিজুর রহমান: ৭০তম জন্মজয়ন্তী- দুরন্ত সত্তর’ স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা।  ছবি: বাংলানিউজ১৯৭৫ সালে কালীগঞ্জ মহাবিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে শিক্ষাদান শুরু করে ২০১০ সালে অধ্যাপক পদে থাকাবস্থায় কর্মজীবন থেকে অবসর নেন তিনি।

গুণী এ লেখকের প্রথম লেখা ছাপা হয় ১৯৬৫ সালে। এরপর আর থামেনি তার চিন্তার প্রকাশ। একাধারে তিনি বিশ্বসাহিত্য, ইতিহাস, মুত্যু, আত্মহত্যাকে উপজীব্য করে লিখে গেছেন অসংখ্য প্রবন্ধ। লিখেছেন গল্প, ছড়া আর কবিতার ওপর আলোচনা। এছাড়া সম্পাদনার ক্ষেত্রেও তিনি রেখেছেন উজ্জ্বল স্বাক্ষর। ১৯৮৩ সাল থেকে তিনি ‘নদী’ নামের একটি সাহিত্যপত্রও সম্পাদনা করছেন।

লেখালেখির স্বীকৃতি হিসেবে তিনি বেশ কয়েকটি সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো-সাতক্ষীরা সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার (১৯৯৫); ম্যান অব দি ইয়ার, বায়োগ্রাফিক্যাল ইনস্টিটিউট, যুক্তরাষ্ট্র (১৯৯৭); কবি জসিমউদদীন সাহিত্য পুরস্কার (২০১১); শিমুল-পলাশ সাহিত্য পুরস্কার, কলকাতা (২০০৪); বাংলা ভাষা সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্র পুরস্কার (২০০৭); সিকানদার আবু জাফর পদক (২০১২); কবি সুকান্ত পুরস্কার, কলকাতা (২০১৫)।

তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের (প্রবন্ধ) মধ্যে রয়েছে- সাহিত্যে সমাজ ধারা, স্বেচ্ছামৃত্যুর করতলে কবি, সাহিত্য ও সিংহাসন, নোবেল সাহিত্য পুরস্কারের শতবর্ষ, সাতক্ষীরার ভাষা ও শব্দকোষ, কবিদেব কবি, কালীগঞ্জের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধ। সম্পাদনার মধ্যে রয়েছে-মরণরে তুঁ হুঁ মম, খান আনসার উদ্দীন আহমেদ'র রচনাবলী। অন্যান্য প্রকাশনার মধ্যে রয়েছে-বজ্রের বাঁশি (উপন্যাস), কালো সূর্যের নীচে (নাটক), সক্রেটিস (নাটক), যোদ্ধার জতুগৃহ (উপন্যাস)।

অনুষ্ঠানের শুরুতে ‘গাজী আজিজুর রহমান: ৭০তম জন্মজয়ন্তী- দুরন্ত সত্তর’ নামে একটি স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৭
ইইউডি/এইচএ/

** ৭১ বছরে পদার্পণ সাহিত্যিক গাজী আজিজুর রহমানের

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।