ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

রবীন্দ্রনাথ পূর্ববঙ্গে না এলে রবীন্দ্রনাথ হয়ে উঠতেন না 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৭, ২০১৭
রবীন্দ্রনাথ পূর্ববঙ্গে না এলে রবীন্দ্রনাথ হয়ে উঠতেন না  বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে স্মারক দেওয়া হচ্ছে বেগম আকতার কামালকে/ছবি: বাংলানিউজ

খুলনা: ‘রবীন্দ্রনাথ যদি পূর্ববঙ্গে না আসতেন তবে তিনি রবীন্দ্রনাথ হয়ে উঠতেন না। কলকাতার ইট-সুরকি-কাঠের পরিবেশের মধ্যে তিনি বাংলার প্রকৃতি, নিসর্গ, বৈচিত্র্য, বর্ষাররূপ, নদীররূপ, বাংলার সাধারণ মানুষের চিরায়ত জীবনযাত্রা, সুখ-দুঃখ, বেদনা অনুভব করতে পারতেন না। তার সাহিত্যকর্ম হতো না পরিপুষ্ট।’

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) বাংলা ভাষা ও সাহিত্য ডিসিপ্লিনের উদ্যোগে ‘রবীন্দ্রমননে উপনিষদ ও উপনিবেশ’ শীর্ষক রবীন্দ্র স্মারক বক্তৃতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে এ অভিধা দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. বেগম আকতার কামাল।

সোমবার (৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জীবনানন্দ দাশ একাডেমিক ভবনের মাল্টিপারপাস কক্ষে এ বিষয়ে দীর্ঘ বক্তব্য রাখেন তিনি।

স্মারক বক্তৃতায় রবীন্দ্রনাথের জীবনের নানাদিক ও প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তিনি রবীন্দ্র সাহিত্য দর্শন, সৃজনশীলতা, মননভাবনার বিপুল সম্ভারের বহুমুখী দিক সম্পর্কে কথা বলেন আকতার কামাল।

‘রবীন্দ্রনাথ একইসঙ্গে ছিলেন সাহিত্যিক ও দার্শনিক। তিনি ছিলেন অসম্প্রদায়িক। রবীন্দ্রনাথ নিত্যকর্মে চিরায়ত সৌন্দর্য ও নতুন সম্ভাবনাকেই খুঁজেছেন। ’

প্রাসঙ্গিকভাবে তিনি উল্লেখ করেন রেনেসাঁর যুগে ইউরোপীয়রা বিপুল সম্পদ জড়ো করেছিলো কিন্তু তারা আত্মিক সম্পদ হারিয়েছিলো। ইউরোপীয় রেনেসাঁর পিছনে লুণ্ঠনের ইতিহাস ছিলো। কিন্তু রবীন্দ্র রেনেসাঁয় ছিলো প্রাণ প্রকৃতির প্রসারণ।

বেগম আকতার কামালের সঙ্গে বিভাগের শিক্ষক ও ডিন/ছবি: বাংলানিউজবেগম আকতার কামাল দুঃখ করে বলেন, আজ পণ্যরূপী সভ্যতা আমাদের পেয়ে বসেছে। আমাদের চিত্ত থেকে সার্বজনীন মানবতা, সৌন্দর্য চেতনা, মূল্যবোধ, অন্তরের শান্তি ও শক্তি হারিয়ে যাচ্ছে। রবীন্দ্র ভাবনার মূল সুরই ছিলো আনন্দলোকে অবগাহন। প্রত্যেকটি কবিতার একটি চাবিশব্দ থাকে। এই চাবিশব্দ দিয়েই কবিতার মূলভাব ও রহস্য উন্মোচন করতে হয়। রবীন্দ্রনাথ বাংলা ভাষাকে সাহিত্যের ভাষায় পরিণত করেছেন। রূপ থেকে রূপান্তরের মাধ্যমে তিনি বিশ্বলোকে মন্ময় চিত্তে অবগাহন করেছেন। বসুন্ধরার অন্তঃপুরে মিশে গেছেন। হয়েছেন গভীরভাবে আপ্লুত।

তিনি এ ধরনের আয়োজনের জন্য ডিসিপ্লিনের শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

বাংলা ভাষা ও সাহিত্য ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. শেখ মো. রজিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলা ও মানবিক স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. সাবিহা হক ও ছাত্রবিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. আশীষ কুমার দাস।  

আলোচনা শেষে রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণ দিবসে তার স্মরণে রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করেন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীরা।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চলনা করেন সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনের প্রভাষক মৌমিতা রায়। এর আগে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে বেগম আকতার কামালকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। তাকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন কলা ও মানবিক স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. সাবিহা হক।

এসময় বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের শিক্ষক ছাড়াও শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মাচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ০৭, ২০১৭
এমআরএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।