ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

রাজশাহীতে সপ্তাহব্যাপী বইমেলা শুরু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৫
রাজশাহীতে সপ্তাহব্যাপী বইমেলা শুরু ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

রাজশাহী: রাজশাহী মহানগরীতে শুরু হলো সপ্তাহব্যাপী বইমেলা। শনিবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল মাঠে বেলুন উড়িয়ে এই বইমেলার উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক।



‘চেতনার আলোড়নে বই’ শীর্ষক স্লোগানে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের উদ্যোগে ও রাজশাহী জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত এই মেলা চলবে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাসান আজিজুল হক বই পাঠ মানুষের মধ্যে প্রজ্ঞা তৈরি করে উল্লেখ করে বলেন, প্রযুক্তি তথ্য ছাড়া মানুষের মধ্যে কিছুই দেয়নি, আর তথ্য দিয়ে কিছু হয় না। জ্ঞানও তৈরি করে না, জ্ঞান দিয়েও তেমন কিছু হয় না, যা দিয়ে কিছু হয়, তা হচ্ছে প্রজ্ঞা। এই প্রজ্ঞা পাওয়া যায় গ্রন্থপাঠে।

তিনি বলেন, গ্রন্থপাঠ আমাদের ওপর নানাদিক থেকে আলো ফেলে। আমরা যে জীবন যাপন করি, তা হচ্ছে অন্তর্জীবন। এই অন্তর্জীবনকে সম্প্রসারিত ও বর্হিজগতের সঙ্গে সংযোগ ঘটায় বই।

হাসান আজিজুল হক বলেন, আমাদের কথায় টান পড়লে আমরা রবীন্দ্রনাথের দ্বারস্থ হয়। এই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বই সম্পর্কে বলেছেন, বই হচ্ছে উত্তাল সমুদ্র। বই যে কী করতে পারে, তার সব ইতিহাসে লেখা আছে।

তিনি বিশ্ব সাহিত্যের বিভিন্ন উদাহরণ টেনে বলেন, পৃথিবীর সব মানুষ মারা যায়, মানস মারা যায় না। বিশ্বের অনেক অমর ব্যক্তি মারা গেছেন, কিন্তু তাদের কাজ রেখে গেছেন। এই কাজ পড়ার মধ্য দিয়ে আমরা আলোকিত হচ্ছি।

হাসান আজিজুল হক বলেন, সক্রেটিস বলেছিলেন, মানুষের কাজ হচ্ছে সত্যের অনুসন্ধান করা, সত্য পাওয়া না গেলেও সারাজীবন এই সত্যের সন্ধান করে যেতে হবে।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বইমেলার গুরুত্ব সম্পর্কে বলেন, রাজশাহী অঞ্চল থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদ স্থানান্তর করা হয়েছে। এ বইমেলা সেই সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বইমেলার শত শত বইয়ের শত শত লাইনের কালো অক্ষর যদি সেই সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় একটু ভূমিকা রাখে, তাহলে এ আয়োজন সার্থক হবে বলে মনে করেন শাহরিয়ার আলম।

তিনি সমবেতদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা যারা এই মেলায় উপস্থিত হয়েছেন, তাদের নিজস্ব উপলব্ধি আছে বলে মনে করি।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা সন্ত্রাসবাদ ও মৌলবাদ রুখতে কাজ করছি। আপনারা আমাদের সঙ্গে এ কাজে সহযোগিতা করলে আমরা আরও এগিয়ে যাবো। নতুবা দেশ ভয়াবহ সংকটের দিকে ধাবিত হবে।

তিনি সবাইকে বই কিনে বই পড়ার আহ্বান জানান। এছাড়া, তার নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি স্কুলে বই উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

মেলার উদ্বোধনী পর্বে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মনজুরুর রহমান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন রাজশাহীর অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মুনির হোসেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশনা সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মেজবাহউদ্দিন আহমেদ, সহ-সভাপতি ও অন্য প্রকাশের স্বত্বাধিকারী মাজাহারুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে ‍আরও অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার রাজশাহী বিভাগের উপ-পরিচালক দেওয়ান মো. শাহরিয়ার ফিরোজ।

এ মেলা প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। তবে, শুক্র ও শনিবার মেলা শুরু হবে বেলা ১১টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।

মেলায় ৬০টি প্রকাশনা সংস্থা অংশ নিয়েছে। প্রত্যেকটি প্রকাশনা সংস্থারই পৃথক পৃথক স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মেলায় প্রতি বইয়ে শতকরা ২৫ ভাগ কমিশন দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৫
এসএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।