ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

মীর মশাররফ হোসেন পদক পেলেন কবি ওবায়েদ আকাশ

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৪ ঘণ্টা, মে ১০, ২০২৩
মীর মশাররফ হোসেন পদক পেলেন কবি ওবায়েদ আকাশ ওবায়েদ আকাশ

২০২৩ সালের মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি পদক পেলেন সমকালীন বাংলা ভাষা ও গত শতকের নব্বইয়ের দশকের ভিন্ন ধারার কবি ওবায়েদ আকাশ। তিনি বাংলা ভাষার প্রথম সারির লিটল ম্যাগাজিন ‘শালুক’-এর সম্পাদক ও দেশের প্রাচীনতম ও ঐহিত্যবাহী পত্রিকা দৈনিক সংবাদ-এর সাহিত্য সম্পাদক।

মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি সংসদের সভাপতি কবি সালাম তাসির এক আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় এ তথ্য জানান।  

মীর মশাররফ হোসেন (১৮৪৭-১৯১১) ছিলেন একজন বাঙালি ঔপন্যাসিক, নাট্যকার ও প্রাবন্ধিক। তিনি বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান গদ্যশিল্পী ও বাঙালি মুসলমান সাহিত্যিকদের পথিকৃৎ। কারবালার যুদ্ধকে উপজীব্য করে রচিত ‘বিষাদ সিন্ধু’ তাঁর সবচেয়ে জনপ্রিয় সাহিত্যকর্ম। তিনি তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতে (বর্তমান বাংলাদেশ) কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি উপজেলার চাঁপড়া ইউনিয়নের লাহিনীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।  

তাঁর পৈতৃক নিবাস রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকন্দি উপজেলার পদমদি গ্রামে। তাঁর স্মৃতিকে ধারণ করে সাহিত্য-সংস্কৃতির নানা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে মীর মশাররফ হোসেন স্মৃতি সংসদ। তাঁর নামেই এ পদকটির নামকরণ করা হয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে এই সংগঠনটি নিয়মিত দেশের বিশিষ্ট কবি-লেখকদের এ পদক দিয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালের পদকটি দেওয়া হবে সময়ের শক্তিমান কবি ওবায়েদ আকাশকে। আগামী ২৬ ও ২৭ মে দুদিনব্যাপী রাজবাড়ীতে অনুষ্ঠিতব্য মীর মশাররফ হোসেন সাহিত্য সম্মিলনে এ পদক প্রদান করা হবে।  

ওবায়েদ আকাশ মূলত কবি। এছাড়া তিনি প্রবন্ধ, অনুবাদ ও সম্পাদনা কাজে সমানভাবে পারদর্শী। কবিতা ও অন্যান্য বিষয় মিলে এ যাবত তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা ৪৫টি। এর মধ্যে তাঁর মৌলিক কাব্যগ্রন্থ ২৬টি। ১৯৯৯ সাল থেকে সম্পাদনা করছেন অধুনাবাদী চিন্তার লিটল ম্যাগাজিন ‘শালুক’। শালুকের এ যাবত প্রকাশিত সংখ্যা ২৬টি। বাংলা একাডেমি প্রকাশ করেছে তাঁর নির্বাচিত কবিতার বই ’উদ্ধারকৃত মুখমণ্ডল’। কলকাতা ও ত্রিপুরা থেকে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর ৬টি গ্রন্থ। ঐতিহ্যের অন্বেষা ও আত্মপরিচয় অনুসন্ধানের মাধ্যমে নিজের ভাবনাকে বিশ্ব পরিসরে তুলে ধরাই তাঁর কাব্যভাষার মূলসুর। নিজগ্রাম সুলতানপুরকে ঘিরে লিখেছেন পুরো একটি কাব্যগ্রন্থ ‘পৃষ্ঠাজুড়ে সুলতানপুর’। এ সূত্রেই তিনি প্রবর্তন করেছেন অধুনাবাদী চিন্তাকাঠামো নামে বাঙালির নিজস্ব ভাবনাপদ্ধতি। নতুন ও ভিন্ন ধারার মেধার অন্বেষা ও বাঙালির নিজেকে খুঁজে পাওয়ার মধ্যেই এ চিন্তাকাঠামোর সার্থকতা নিহিত।

১৯৭৩ সালের ১৩ জুন রাজবাড়ী জেলার সুলতানপুর গ্রামে জন্ম নেয়া কবি ওবায়েদ আকাশ ইতিপূর্বে আরো গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার ও সম্মান লাভ করেছেন। তাঁর ‘শীতের প্রকার’ কাব্যগ্রন্থের জন্য ২০০৮ সালে পেয়েছেন এইচএসবিসি-কালি ও কলম তরুণ কবি পুরস্কার, ২০০৯ সালে পেয়েছেন কলকাতা লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি ও গবেষণা কেন্দ্র পুরস্কার, ২০১২ সালে লন্ডন থেকে পেয়েছেন সংহতি লিটারারি সোসাইটি সম্মাননা পদক, ২০২২ সালে জাতীয় পর্যায়ে পেয়েছেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি লিটল ম্যাগাজিন সম্মাননাসহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার।

ওবায়েদ আকাশ, শালুকের সম্মাদকমণ্ডলী ও শুভাকাঙ্ক্ষিদের নিয়ে এ বছর থেকে শুরু করেছেন ‘শালুক আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মিলন’ ও ‘শালুক আন্তর্জাতিক সাহিত্য পুরস্কার’। দেশ-বিদেশের অসংখ্য কবি-লেখক-শিল্পী এ সম্মিলনে অংশগ্রহণ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১০২৪ ঘণ্টা, মে ১০, ২০২৩
এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।